সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, কালের খবর : আগামী সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে বিভিন্ন দলের এক ডজনেরও বেশি নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের পাশাপাশি নবম সংসদ নির্বাচনের মতো জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোট হলে এই হিসাব-নিকাশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য।
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি নাকি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের (ইনু) কে মনোনয়ন পাবেন এলাকায় এ নিয়েই যত আলোচনা। ইসলামী ঐক্যজোট মহাজোটের সঙ্গে গেলে এ ক্ষেত্রে কী হয়, সেটা নিয়েও রয়েছে নানা কথা। এ ছাড়া আছে আওয়ামী লীগে আগ্রহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে অবশ্য ততটা জুটঝামেলা নেই। ওই জোট থেকে বিএনপির কেউ মনোনয়ন পাচ্ছেন, সেটা এক প্রকার নিশ্চিত। তবে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে হবে জোর লড়াই। এরই মধ্যে মনোনয়নকেন্দ্রিক কোন্দল শুরু হয়েছে বিএনপিতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে উপজেলার বড়িকান্দি ও সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন কেটে পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
নতুন সীমানা নির্ধারণে এ দুটি ইউনিয়নকে আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫-এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে মনোনয়নকেন্দ্রিক নতুন হিসাব-নিকাশও কিছুটা পাল্টেছে। বিভিন্ন দলের এক ডজনেরও বেশি নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
আসনটিতে বিভিন্ন দলের নেতারা ঘুরে ফিরে ক্ষমতায় এসেছেন। এ আসন থেকে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) তিনবার, জাতীয় পার্টি (নাফি) একবার, আওয়ামী লীগ তিনবার, বিএনপি দুইবার ও জাসদ (ইনু) প্রার্থী একবার জয়লাভ করেন। তবে এলাকাবাসী বলছে, বেশির ভাগ সময়ই নবীনগর ছিল উন্নয়নবঞ্চিত।
নবম জাতীয় সংসদে জাসদের (ইনু) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শাহ জিকরুল আহমেদ খোকন মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ওই নির্বাচনে তিনি একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা কাজী মো. আনোয়ার হোসেনকে (বর্তমানে প্রয়াত) পরাজিত করে আলোচনায় চলে আসেন। সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমান বাদল।
আলোচনা আছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জিকরুল আহমেদ ও ফয়জুর রহমানের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জিকরুল আহমেদ পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হননি। যদিও তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য আটঘাট বেঁধে নেমেছেন। জোটের শরিক দল হিসেবে জাসদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এ আসনটি পাবে বলে দলটির নেতাকর্মীরা আশা করছে।
এ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও দলের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সদস্যসচিব কাজী মামুনুর রশিদ সম্ভাব্য মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে বেশ আলোচনায় আছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি সংসদীয় আসন থেকে অন্তত একটি আসন মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হলে সেটি নবীনগর হবো—এমন আশায় দলটির নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত।
বিএনপির সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ার হোসেন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ গ্রহণযোগ্য ছিলেন। তবে তাঁর মৃত্যুর পর বিএনপির আগের অবস্থা নেই। দলের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিভেদ। কাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন তাপসকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে বিএনপির একটি পক্ষ।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল ছাড়াও দলটির আরেক নেতা এবাদুল করিম বুলবুল বেশ আলোচনায় আছেন। বিগত সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের মনোনয়ন চান। দলের মনোনয়ন লাভের আশায় এক ধরনের ব্যতিক্রমী প্রচারণায় আছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মো. আলামিনুল হক। এলাকার কেউ মারা গেলে সেখানে যাওয়া, কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে দেখতে যাওয়া এবং সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি নিজের অবস্থানের কথা জানান দিচ্ছেন। জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় সভা-সমাবেশে প্রার্থী হওয়ার কথা বলছেন। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ খান, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আকবর উদ্দিন সিদ্দিকের ছেলে ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ, দলের নেতা মো. আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া টিপু, মো. হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম নবী মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
নেতাকর্মীরা জানায়, ফয়জুর রহমান বাদল সংসদ সদস্য নির্বাচন হওয়ার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একাধিক সড়ক নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেন। ব্যক্তি হিসেবেও এলাকার লোকজন তাঁকে পছন্দ করে। তবে এলাকায় কম আসাটা তাঁকে পিছিয়ে রেখেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়েছে। বেশির ভাগ সময়ই তিনি হেলিকপ্টার নিয়ে এলাকায় আসেন বলে ‘হেলিকপ্টার’ এমপি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আর এসব কারণে এবার তিনি নির্বাচন করবেন কি না, এ নিয়েই অনেকের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
এবাদুল করিম বুলবুল এবার আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। কেননা তাঁর নিজ ইউনিয়ন বড়িকান্দি ও পাশের সলিমগঞ্জ এবার নবীনগর আসনের সঙ্গে যুুক্ত হয়েছে। এ পরিবর্তনের কারণে এবাদুল করিম বুলবুলের সমর্থকরা নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। তিনি প্রার্থী হলে জয়ের সম্ভাবনা দেখছে তারা।
জানা গেছে, জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে নবীনগর আসনটি দাবি করবে জাসদ। এ ক্ষেত্রে দলটির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জিকরুল আহমেদ খোকন। আলোচনা আছে, জোট বা মহাজোটগত যেভাবেই হোক মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের ভোটের ওপরই তাঁকে নির্ভর করতে হবে। কেননা জাসদের উল্লেখযোগ্য ভোট নবীনগরে নেই।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টিও এ আসনটি দাবি করবে। এ আসনে জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব কাজী মামুনুর রশিদ।
এদিকে নবীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পদটি বিএনপির দখলে আছে। দুটি পদেই রয়েছেন বিএনপি নেতা। আর এ থেকেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছে দলটির নেতাকর্মীরা। তবে মনোনয়নকেন্দ্রিক দ্বিধাবিভক্তির কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে দলটির নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির বড় একটি অংশই প্রয়াত সংসদ সদস্য কাজী আনোয়ার হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন তাপসের পক্ষে রয়েছে। তবে দীর্ঘ ধরে মাঠে কাজ করছেন বলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তকদীর হোসেন মো. জসিমও একটা বলয় সৃষ্টি করেছেন। এ ছাড়া বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দলের নবীনগর উপজেলা শাখার সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারওয়ার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, উপজেলা বিএনপি নেতা সায়েদুল হক সাঈদ, আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সহকারী মহাসচিব আলী আজ্জম জালাল, কেন্দ্রীয় আরাফাত রহমান কোকো যুব ও ক্রীড়া সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন আলম মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে আবুল হাসনাত আমিনীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হবেন সংগঠনটির নেতা মাওলানা মেহেদী হাসান। আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির জোট হলেও তারা এ আসনটি দাবি করবে। মেহেদী হাসান ২০১৪ সালে নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মজলিসে শুরার সদস্য মাওলানা উসমান গনি রাসেল দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
যুবলীগ নেতা কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই মাঠপর্যায়ে কাজ করছি। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। ’ বিএনপি নেতা সায়েদুল হক সাঈদও মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নবীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সফিকুল আলম বলেন, ‘এ আসন থেকে আমি নিজেও একজন প্রার্থী। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের পদ আমাদের দখলে থাকায় আমরা উজ্জীবিত হই। আশা করছি, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জয় হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তাঁর হয়েই আমরা কাজ করব। ’
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘দলের তৃণমূল পর্যায়ের কমিটি করতে আমি সব জায়গায় গেছি। আমি যেখানেই যাচ্ছি, বেশ সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, একজন নারী প্রার্থী হিসেবে দল আমাকে মূল্যায়ন করে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেবে। ’
ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনয়নপ্রত্যাশী মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম আমাকে বেশ পছন্দ করে। আমি সব সময় জনগণের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করি। ’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জোটের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। জোট হলেও আমরা আসনটি চাইব। ’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি মহাজোটের সঙ্গে থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব কয়টি আসনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়ন পাবে বলে আমি আশাবাদী। ’
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘বিগত সংসদ নির্বাচনে মহাজোট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসন জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছিল। যদিও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সদর-বিজয়নগর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেননি। এবার ওই দুটি আসনসহ নবীনগরের আসনটিও দাবি করা হবে। ’
নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম বলেন, ‘নবীনগরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুব ভালো। এখানে জোটের কোনো দলের ভোট নেই। আগামী সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্যই দলের মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করি। ’
আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই নবীনগর উন্নয়নবঞ্চিত উপজেলা। আমি নির্বাচিত হলে নবীনগরকে একটি আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। ’
মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি সায়েদুল হক সাঈদ বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী। মনোনয়ন পেলে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। ’
মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী মামুনুর রশিদ। বিগত দিনেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা ভালো। যে কারণে জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী। ’
দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন ।